নিষিদ্ধ থাকার পরও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন এবং অনলাইন বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন।
রাজধানীতে গত বুধবার অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল থেকে গ্রেপ্তার ২৪৪ জনের মধ্যে ১৫০ জনের বেশি ব্যক্তি টেলিগ্রাম ও বোটিম অ্যাপ ব্যবহার করছিলেন—এমন তথ্য একটি সরকারি বৈঠকে জানানো হয়েছে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা–বিষয়ক কোর কমিটির বৈঠকে এই তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
বৈঠকে আলোচনা হয়, আপাতত রাতে দুটি অ্যাপের ব্যবহার সীমিত করা যায় কি না এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর টেলিগ্রাম ও বোটিম বাংলাদেশে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বৈঠকে জানানো হয়, সারাদেশে ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সক্রিয় করা হচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, তফসিল ঘোষণার পর এসব যোগাযোগের মাধ্যমে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করতে পারেন। এ কারণে অ্যাপ দুটির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জামিন প্রাপ্তি নিয়েও আলোচনা হয়। বুধবার গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মুঠোফোন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ও সভায় যোগ দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। এ অবস্থায় জামিন প্রক্রিয়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন উপস্থিত কর্মকর্তারা।
পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গত ১৩ মাসে ‘ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত’ অভিযোগে ৪৪ হাজার ৪৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় ৭৩ শতাংশ—অর্থাৎ ৩২ হাজার ৩৭১ জন জামিন পেয়েছেন।
বৈঠকে বলা হয়, স্থানীয় পর্যায়ে অনেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি), আইনজীবী সমিতি ও রাজনৈতিক নেতারা জামিন প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখছেন। এখন থেকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের জামিনের বিষয়টি আরও কঠোরভাবে দেখা হবে এবং জেলা প্রশাসকদের সতর্ক করা হবে।
উল্লেখ্য, টেলিগ্রাম একটি জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ, যার প্রতিষ্ঠাতা রুশ বংশোদ্ভূত পাভেল দুরভ। অন্যদিকে বোটিম ব্যবহার করা হয় কথা বলা, ভিডিও কল এবং অর্থ লেনদেনের জন্য। এর প্রধান কার্যালয় যুক্তরাষ্ট্রে।