জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক সেবনের সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. জাবের। তিনি মওলানা ভাসানী হলের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আইবিএ বিভাগের ৫১তম ব্যাচের (২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের ছাদে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের অভিযোগে হলে ওঠেন নির্বাচিত প্রতিনিধি ও কিছু শিক্ষার্থী। ছাদে গিয়ে তারা দেখতে পান, প্রায় ১৫ জনের একটি দল পানির ট্যাংকের পাশে বসে বাংলা মদ ও গাঁজা সেবন করছে। উপস্থিতদের মধ্যে ছিলেন মো. জাবের ও তার সহযোগীরা। পরিচয় জানতে চাইলে তারা অস্বীকৃতি জানায় এবং পরে আক্রমণাত্মক আচরণ শুরু করে।
ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন আইবিএ বিভাগের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী—আদিত্য (৪৭ ব্যাচ), প্রথম, জাবির, রেজওয়ান (৫১ ব্যাচ), তৌহিদ, জিহাদ, নোমান, প্রসেনজিৎ (৫০ ব্যাচ), সামির (৪৯ ব্যাচ), লাবিব (৫২ ব্যাচ), সাখাওয়াত (৫৩ ব্যাচ) প্রমুখ। আরও কয়েকজন থাকলেও তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
হল প্রাধ্যক্ষ ঢাকার বাইরে থাকায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হতে পারেননি। এছাড়া রাত গভীর হওয়ায় অন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সাথেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলমকে জানানো হলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী হলে প্রবেশ না করে শিক্ষার্থীদের নাম-পরিচয়সহ প্রমাণ সংগ্রহ করে রাখতে বলেন এবং জানান পরদিন এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের খাদ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সম্পাদক হুসনে মোবারক বলেন, “মাদক সেবনের সময় তাদের আটক করে শিক্ষার্থীরা। অনেকেই এই হলের আবাসিক নন, তারা মদ্যপান করতে এখানে আসেন। পরিচয় জানতে চাইলে তারা হুমকি দেয় ও উত্তেজিত আচরণ করে। এতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
হলের সাধারণ শিক্ষার্থী শরিফুল আলম সাকিব জানান, “ছাদে গিয়ে তাদের কাছে বাংলা মদ, গাঁজা ও অন্যান্য মাদক পাওয়া যায়। পরিচয় জানতে চাইলে তারা আমাদের প্রতি রুঢ় আচরণ করে।”
হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাকিব আহমেদ বলেন, “তাদের মাদকসহ ধরে প্রক্টর স্যারকে জানানো হয়। তিনি ভিডিও করে পরিচয় সংগ্রহ করতে বলেন এবং মাদক জব্দের নির্দেশ দেন। জব্দকৃত দ্রব্যাদি প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, “বিষয়টি জানার পর আমরা নিয়ম অনুসারে ব্যবস্থা নিচ্ছি। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা আসেনি, তবে তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।