আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনামলে ছাত্রলীগ পদ-পদবি বণ্টনকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রদল। তাদের দাবি, সংগঠনটি এখনো একই ধারা অব্যাহত রেখেছে এবং সম্প্রতি নারী নিপীড়নের ঘটনাও ঘটিয়েছে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ঘিরে রিট আবেদনকারী এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের হুমকির প্রতিবাদে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান ফটকে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব অভিযোগ তোলেন ছাত্রদলের নেতারা। মানববন্ধনে সংগঠনের নারী নেত্রীরাও বক্তব্য রাখেন।
তাদের অভিযোগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ‘গুপ্ত কার্যক্রম’ চালিয়ে যেতে ছাত্রলীগকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর।
মানববন্ধনে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, ছাত্রশিবির তাদের এই গুপ্তচরবৃত্তির মাধ্যমে অনেক কিছু বাস্তবায়ন করতে চায়। তারা বিগত সাড়ে ১৫ বছর গুপ্তরাজনীতি করেছে। এখনো যদি লজ্জা পায় নারীদের মতো, আমি তাদেরকে আহ্বান জানাই, তারা যেন বোরকা বোরকা এবং চুড়ি পরে এই রাজনীতি করে। ছাত্ররাজনীতি করবে তারাই, যারা সাহসী, বিবেকবান।
সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির বলেন, ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া শিবিরের এক নেতা ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে আমাদের এক বামপন্থী বোন একটি রিট দায়ের করেছিল শুধু। সে অপরাধে গুপ্ত সংগঠন ছাত্রশিবিরের একজন গুপ্তশিবির যেভাবে আমাদের সেই সহযোদ্ধা বোনকে পদযাত্রা করে গণধর্ষণের হুমকি দিয়েছিল। তার প্রতিবাদ এবং সারাদেশে সমস্ত রাজনৈতিক নারী কর্মীদেরকে অব্যাহতভাবে গুপ্ত সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাইবার বুলিং এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে নারীদের শারীরিকভাবে আঘাতের প্রতিবাদে আমাদের এই মানববন্ধন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন কোনো গুপ্তরাজনীতি না থাকে, সেই ঘোষণা দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের প্রতি দাবি জানান ছাত্রদলের এই নেতা। নাছির বলেন, গুপ্ত সংগঠনের নেতা আলী হুসেন যেভাবে আমার বোনকে পদযাত্রা করে গণধর্ষণের হুমকি দিয়েছে, এ রকম ঘটনা আরও ঘটতে থাকবে। কিন্তু যতই ঘটতে থাকবে ছাত্রশিবির গুপ্তরাজনীতি করার কারণে, তারা তাদের কমিটি প্রকাশ না করার কারণে, যখন প্রকাশিত হবে তারা তখন ঘোষণা দেবে যে সে ব্যক্তি তাদের ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে কোনোভাবে সম্পৃক্ত না।
ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মানসুরা আলমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রেহানা আক্তার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাকসুদা রিমা, শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক রিমি ইসলাম, সহ-ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক সুলতানা আক্তার মীম, সহ-সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল নওরীন ঊর্মী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের ভিপি প্রার্থী তাওহিদা সুলতানা, রোকেয়া হল ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শ্রাবন্তী হোসেন বন্যা, হল ছাত্র সংসদের প্রার্থী শরীফা ইসলাম সূচনা ও জান্নাতুল ফেরদৌসী জয়ী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রূপন্তী রত্না, কবি নজরুল কলেজের মেহেরুন, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের মাশফিয়া আক্তার প্রমুখ।