চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিহার বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে নির্বাচন কমিশন রাজ্যের ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। এ সময়েই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে—ভোটার তালিকায় বাংলাদেশ, নেপাল ও মায়ানমারের নাগরিকদের খোঁজ মিলেছে।
ভারতীয় সংবাদসংস্থা পিটিআই জানায়, ভোটার যাচাইয়ে নিযুক্ত বুথ স্তরের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করে জানিয়েছেন, বহু বিদেশি নাগরিক বিহারে অবস্থান করছেন এবং তাঁদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ভোটার তালিকায়। যদিও নির্বাচন কমিশন এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা দেয়নি, তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে “বিপুল সংখ্যক বিদেশি ভোটার” চিহ্নিত হয়েছে।
পিটিআইয়ের তথ্যমতে, ২৫ জুন থেকে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু করে কমিশন। এই সময় ভোটারদের কাছে ফর্ম বিলি করা হয় এবং তা জমা দেওয়ার শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ জুলাই। ১ আগস্ট খসড়া তালিকা প্রকাশের পর এসব বিদেশি নাগরিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
কমিশন নিশ্চিত করেছে, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা থেকে বেআইনি বিদেশি নাগরিকদের বাদ দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে ১১টি নির্দিষ্ট পরিচয়পত্রের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, যার মধ্যে সহজলভ্য নথি যেমন আধার ও রেশন কার্ড অন্তর্ভুক্ত নয়।
এ নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কও শুরু হয়েছে। বিরোধী দলগুলো কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে “ভোটাধিকার হরণের একটি ষড়যন্ত্র” হিসেবে দেখছে। পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং অন্যান্যরা এই প্রক্রিয়া স্থগিত করতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন।
তাঁদের দাবি, বহু প্রকৃত ভোটার, যারা দীর্ঘদিন ধরে ভোট দিয়ে আসছেন, তাঁদেরও এখন পরিচয় প্রমাণ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। আদালতে ১০ জুলাই প্রথম শুনানির পর কমিশনকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, ভোটার শনাক্তকরণে আধার, ভোটার আইডি এবং রেশন কার্ডকে স্বীকৃতি দিতে হবে।
নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক ঘোষণায় বলা হয়েছে, বিহারের ৮০.১১ শতাংশ ভোটার ইতিমধ্যে ফর্ম জমা দিয়েছেন। অর্থাৎ প্রতি পাঁচ জনে চারজন এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ৩০ সেপ্টেম্বর।