ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান হিসেবে স্বীকৃত আল-আকসা মসজিদের চত্বরে এবার ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের নাচ-গান ও বাধাহীনভাবে ঘোরাফেরার অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম।
ইসরায়েলভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম চ্যানেল সেভেন এক প্রতিবেদনে জানায়, “এই প্রথমবারের মতো আল-আকসা চত্বরে ইহুদি দর্শনার্থীরা গান, নাচ এবং মুক্তভাবে ঘোরাফেরার অনুমতি পেয়েছেন।” প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-গেভির প্রণীত নতুন নীতির অধীনে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু‘র জোটসঙ্গী বেন-গেভির একজন অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ও কট্টর ডানপন্থি ‘জিউইশ পাওয়ার পার্টি’-এর শীর্ষ নেতা। বর্তমানে তিনি যুদ্ধকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র ও পুলিশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।
চ্যানেল সেভেনের প্রতিবেদন অনুসারে, তিন সপ্তাহ আগে কয়েকটি ইহুদি ধর্মীয় সংস্থা আল-আকসা চত্বরে প্রবেশাধিকার বাড়ানোর দাবিতে বেন-গেভিরের সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “আমি চাই, পুরো আল-আকসা চত্বরজুড়ে সঙ্গীতের ধ্বনি বেজে উঠুক।”
পরে এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই চত্বরজুড়ে গান, নাচ এবং বাধাহীন চলাফেরার অনুমতি দেওয়া হয়। এরইমধ্যে আল-আকসা চত্বরে দায়িত্বরত পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে— যাতে সঙ্গীত, নৃত্য কিংবা ভ্রমণের কোনো কর্মকাণ্ডে বাধা সৃষ্টি না হয়।
যদিও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত সরকারি পর্যায় থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি, তবে প্রতিবেদনে বলা হয়, বেন-গেভির ২০২২ সালে জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই আল-আকসা চত্বরে প্রচলিত আইন ও বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের ঘটনা বাড়ছে।
বলা বাহুল্য, বেন-গেভিরের এই অনুমতি আল-আকসা চত্বরের ধর্মীয় মর্যাদা সংরক্ষণ সংক্রান্ত বহু বছরের লিখিত নিয়মনীতি ও স্থিতাবস্থার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
উল্লেখ্য, ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে প্রথম কেবলা ছিল আল-আকসা মসজিদ। পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত এই পবিত্র স্থান ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েলের দখলে। ১৯৮০ সালে পুরো পূর্ব জেরুজালেম ইসরায়েল নিজ ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আজও তা স্বীকৃতি দেয়নি।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, চ্যানেল সেভেন
পলিটিক্স /মি