পাকিস্তানি অভিনেত্রী হুমাইরা আজগরের মৃত্যুর খবরে স্তব্ধ হয়ে গেছে পুরো শোবিজ অঙ্গন। শুধু তার অকাল মৃত্যু নয়, মৃত্যুর পর তার সঙ্গে যা ঘটেছে, সেটিই সবাইকে আরও বেশি বিস্মিত ও মর্মাহত করেছে। গতকাল (৯ জুলাই) হুমাইরার মরদেহ উদ্ধার করে পাকিস্তান পুলিশ।
করাচির একটি ফ্ল্যাটে থেকে উদ্ধার করা হয় অভিনেত্রী হুমাইরার পচা দেহ। জানা যাচ্ছে, করাচির ইত্তেহাদ কমার্শিয়াল এলাকার ফেজ ৬-এর একটি ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে অভিনেত্রীর দেহ উদ্ধার করা হয়। প্রতিবেশীরা ওই ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিশে সংবাদ দেন। পুলিশ দরজায় ডেকে সাড়া পাননি। অবশেষে দরজা ভেঙে অভিনেত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
অভিনেত্রী হুমাইরার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হলে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য। প্রতিবেদনে জানা যায়, যখন পুলিশ তার মরদেহ খুঁজে পায়, তখন তা পচে গলে যাচ্ছিল। হাঁটু পর্যন্ত শরীর ক্ষয় হয়ে গিয়েছিল, মুখমণ্ডলও বিকৃত হয়ে পড়েছিল, ফলে শুরুতে পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি। পরে অভিনেত্রীর মোবাইল ফোন, ছবি ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় যে এটি হুমাইরা আজগরের মরদেহ।
পুলিশ জানিয়েছে, দেহে পোকা ধরে গিয়েছিল হুমাইরার মরদেহ। লাশ শনাক্ত করাই কঠিন হয়ে পড়েছিল। পুলিশ লাশ শনাক্ত করার পরে ময়নাতদন্তে পাঠায়। আর ময়নাতদন্ত থেকেই উঠে আসে এই সমস্ত বিস্ফোরক তথ্য। তদন্তে আরও জানা যাচ্ছে, অভিনেত্রীর মৃত্যু হয়েছে ৬ মাস আগেই। ২ সপ্তাহ নয়, ৬ মাস ধরে ওই বন্ধ ফ্ল্যাটেই পড়েছিল অভিনেত্রীর দেহ। প্রতিবেশীরা কিছু বুঝতেও পারেননি।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, অক্টোবর ২০২৪ সালেই নাকি মৃত্যু হয়েছে হুমাইরার। অক্টোবর মাস থেকেই বিদ্যুতের বিল দেননি হুমাইরা। সেই কারণে তার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পর্যন্ত কেটে দেওয়া হয়েছিল। ২০১৮ থেকে করাচির ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন হুমাইরা।
তবে ২০২৪ সালে তিনি ফ্ল্যাটের ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন। সেই কারণে সেই বাড়ির মালিক হুমাইরার বিরুদ্ধে মামলাও করেছিল। তবে ফরেন্সিক রিপোর্ট বলছে, এই সব কিছু জানার আগেই মারা গিয়েছিলেন হুমাইরা। পুলিশ হুমাইরার বাড়িতে খবর পাঠালে ও তার মরদেহ বাড়িতে দিতে চাইলে তা নিতে অস্বীকার করেন তার বাবা।
হুমাইরার বাবা জানিয়েছেন, তার মেয়ের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। দীর্ঘদিন আগেই তারা মেয়ের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে দিয়েছেন। হুমাইরা কোথায় রয়েছে, কেমন আছে কিছুই তারা জানতেন না।