নিজের বিয়েতে তিন ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছোন সাংসদ-অভিনেতা বলিউডের অন্দরমহলে শোনা যায়, অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা একসময় একই সঙ্গে দুই অভিনেত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছিলেন। তবে বিয়ের সময়, তিনি প্রেমিকা রীনাকে ফিরিয়ে দিয়ে ঋতুপর্ণা (পুনম চন্দিরামনিকে) বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পরেও শত্রুঘ্নের সম্পর্ক চলতে থাকে তার প্রেমিকার সঙ্গে।
শত্রুঘ্ন সিনহা, যিনি সত্তরের দশক থেকে বড় পর্দায় অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন, বর্তমানে তৃণমূলের সাংসদ। তবে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বিভিন্ন বিতর্ক রয়েছে। শোনা যায়, নিজের বিয়েতেই তিন ঘণ্টা দেরি করে পৌঁছেছিলেন তিনি। এমনকি, পরকীয়া করতে গিয়ে স্ত্রীর কাছে হাতেনাতে ধরা পড়েছিলেন।
বলিউডের শোনা তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬৫ সালে এক ট্রেনে সফর করার সময় অভিনেত্রী পুনম চন্দিরামনির সঙ্গে প্রথম দেখা হয় শত্রুঘ্নের। তখন পুনম কাঁদছিলেন, এবং শত্রুঘ্ন প্রথম দেখাতেই তার প্রেমে পড়ে যান। পুনমকে এক পত্রিকা দিয়ে একটি উদ্ধৃতি শেয়ার করার পর তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বের শুরু হয়।
এরপর ১৪ বছরের বন্ধুত্বের পর, শত্রুঘ্ন এবং পুনমের মধ্যে বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। তবে এর মধ্যে অন্য এক বলিউড অভিনেত্রী, রীনা রায় আসেন। ১৯৭৬ সালে ‘কালীচরণ’ ছবিতে প্রথম একসঙ্গে কাজ করেন শত্রুঘ্ন এবং রীনা। পেশাগত সম্পর্ক গড়ালেও পরে তাদের সম্পর্ক আরও গভীর হতে শুরু করে। শত্রুঘ্ন এবং রীনার সম্পর্ক প্রায় ছ’-সাত বছর ধরে চলেছিল বলে গুঞ্জন আছে বলিপাড়ায়।
বিয়ের কথা এগোনোর সময় শত্রুঘ্ন রীনাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে শত্রুঘ্ন বলেন,
“বিয়ের কথা যখন উঠত, তখন আমি সবসময় হিসাব কষতাম—কাকে বিয়ে করা উচিত তার চেয়ে, কাকে বিয়ে করা উচিত নয় তা নিয়ে ভাবতাম।”
তবে শত্রুঘ্নের এই পরকীয়া সম্পর্ক জানত পুনম। একসময় তিনি নিজেই সরে গিয়েছিলেন, কিন্তু শত্রুঘ্ন তার প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চেয়েছিলেন। পুনম এই বিষয়টি জানার পর, শত্রুঘ্নের পরকীয়া সম্পর্কের বিষয়ে তিনি সোজাসাপ্টা মন্তব্য করেন, “যখন আমি শত্রুঘ্ন ও রীনার সম্পর্কে জানি, তখন আমি নিজেই সরে গিয়েছিলাম। কিন্তু শত্রুঘ্ন এমন কাউকে বিয়ে করতে চায়নি, যাকে সে বিশ্বাস করতে পারবে না।”
এছাড়া, ১৯৮০ সালে শত্রুঘ্ন পুনমকে বিয়ে করেন, তবে বিয়ের দিনও তার সময়ানুবর্তিতা নিয়ে কথা ওঠে। শত্রুঘ্ন এক সাক্ষাৎকারে জানান, “আমি কোনো দিনই সময়মতো পৌঁছতে পারতাম না। শুটিং সেটেও আমি দেরি করে পৌঁছাতাম, কিন্তু তারপরও সব কাজ সময়ে শেষ করতাম।”
এদিকে, শত্রুঘ্ন বিয়ের পরও রীনার সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছিলেন বলে শোনা যায়। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন,
“তিনপক্ষীয় সম্পর্ক থাকলে, মন এবং শরীর—দু’টো জায়গায় চাপ পড়তো। প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গেলে স্ত্রীকে ঠকানোর অনুভূতি হতো, আবার স্ত্রীর সঙ্গে থাকলে প্রেমিকার কথা মনে পড়তো।”
শত্রুঘ্ন বলেন, “রীনার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কথা শুনে অনেকেই অবাক হয়েছিল। কিন্তু আমি তাকে ছুড়ে ফেলতে পারতাম না। রীনার পরিবারও আমাদের সম্পর্ক জানতো। সুতরাং, আমি কীভাবে তাকে ত্যাগ করতাম?”
শেষ পর্যন্ত, শত্রুঘ্ন পরকীয়া সম্পর্ক থেকে সরে এসে স্ত্রীর কাছে প্রতিশ্রুতি দেন যে, ভবিষ্যতে আর অন্য কোনো মহিলার দিকে তাকাবেন না। তিনি বলেন,
“পুনম যখন সব কিছু জানে, তখন আমি এক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম—আর কোনো দিন অন্য মহিলার দিকে তাকাব না। শুধুমাত্র এক নারীতেই সারা জীবন অনুরক্ত থাকব।”
শত্রুঘ্ন এবং পুনমের জীবনের এসব তিক্ত সত্যি জনসমক্ষে আসার পর, বলিপাড়া এবং মিডিয়া তাদের সম্পর্ক নিয়ে অনেক কথা বলেছে। তবে, এইসব ঘটনা শত্রুঘ্নের ব্যক্তিগত জীবনেই সীমাবদ্ধ ছিল এবং তার রাজনীতির পথচলায় কোনো প্রভাব পড়েনি।