উত্তম রিজিক বা জীবিকার জন্য মানুষ বাহ্যিকভাবে পরিশ্রম করে, নিজেকে দক্ষ ও যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু শুধু পরিশ্রম বা যোগ্যতা নয়, একজন মানুষকে রিজিক দান করেন মহান আল্লাহ। রিজিক বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে কিছু আত্মিক ও রুহানিয়াতভিত্তিক উপাদান।
চারটি আত্মিক গুণ চর্চার মাধ্যমে একজন মুমিন যেমন দুনিয়ার সফলতা অর্জন করতে পারেন, তেমনি ঈমানী পরিপূর্ণতা ও আত্মিক উন্নয়নের পথও সুগম হয়। নিচে এমন ৪টি গুরুত্বপূর্ণ উপায়ের কথা তুলে ধরা হলো—
১. আল্লাহভীতি (তাকওয়া)
কোরআনের বাণী:
“যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না।”
(সূরা আত-তালাক, আয়াত ২-৩)
তাকওয়া মানে—পাপ থেকে দূরে থাকা, অন্তরকে পরিশুদ্ধ রাখা এবং সর্বদা আল্লাহর ভয় ও ভালোবাসা অন্তরে ধারণ করা। প্রকৃত মুমিন তাকওয়ার কারণে আল্লাহর অপ্রত্যাশিত সাহায্য লাভ করেন।
২. আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা (তাওয়াক্কুল)
হাদিস:
“যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা রাখে, আল্লাহ তার সব দায়িত্ব নিজেই নিয়ে নেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেন, যা তার ধারণার বাইরে।”
(হায়াতুল মুসলিমিন)
তাওয়াক্কুল অর্থ—পরিশ্রমের পরও ফলাফলের সব আশা আল্লাহর উপর ছেড়ে দেওয়া। এটি শুধু মানসিক প্রশান্তি নয়, বরং আল্লাহর প্রতি দৃঢ় আস্থার প্রতীক।
৩. অটল বিশ্বাস (একিন)
কোরআনের বাণী:
“এই কোরআন মানুষের জন্য প্রমাণ, আর যারা নিশ্চিত বিশ্বাস রাখে তাদের জন্য হেদায়াত ও রহমত।”
(সূরা আল-জাসিয়া, আয়াত ২০)
একিন বা দৃঢ় বিশ্বাস মানুষকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখে। সে জানে, তার রিজিক শুধু আল্লাহর হাতে। এ বিশ্বাস তার আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং চিন্তাভাবনায় স্বচ্ছতা আনে।
৪. ক্ষমা প্রার্থনা (ইস্তিগফার)
হাদিসে কুদসী:
“হে আদম সন্তান! তুমি যতক্ষণ আমাকে ডাকবে এবং আমার কাছে আশা রাখবে, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব… যদি তোমার পাপ আকাশ পর্যন্ত পৌঁছায়, তারপর তুমি ক্ষমা চাও—আমি ক্ষমা করব।”
(মিশকাত)
ইস্তিগফার শুধু পাপ মোচনের মাধ্যম নয়, বরং এটি রিজিকে বরকত দেয় এবং জীবনে মানসিক প্রশান্তি আনে।
উপসংহার:
রিজিক শুধু বাহ্যিক শ্রমে বৃদ্ধি পায় না, বরং তাকওয়া, তাওয়াক্কুল, একিন ও ইস্তিগফারের মাধ্যমে রুহানীভাবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বরকত পাওয়া সম্ভব। এগুলো প্রতিদিনের জীবনে অন্তর্ভুক্ত করলে আল্লাহর রহমতে রিজিক বাড়বেই।