গোপালগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আজ বুধবার রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২২ ঘণ্টার কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বার্তায় জানায়, জেলার সাম্প্রতিক সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কারফিউ চলাকালীন সময় সাধারণ মানুষের চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবে না। মাঠে রয়েছে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি।
উল্লেখ্য, ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জে পদযাত্রা আয়োজন করেছিল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
কিন্তু সকাল থেকেই শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে পুলিশের একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং পরে ইউএনওর গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। গোপালগঞ্জ পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জড়িত।
দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে পৌরপার্কে এনসিপির সমাবেশে হামলা চালায় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ভাঙচুর করা হয় মঞ্চ, সাউন্ড সিস্টেম ও চেয়ার। এনসিপির নেতাকর্মীরা পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থল ছাড়েন।
পরবর্তীতে পুলিশি নিরাপত্তায় এনসিপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা—নাহিদ ইসলাম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম ও আখতার হোসেন।
সমাবেশ শেষে মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রার সময় ফের হামলার শিকার হন এনসিপি নেতারা। ছাত্রলীগের কয়েকশ নেতাকর্মী গাড়িবহরে হামলা চালায়। পুলিশ পিছু হটলে এনসিপির নেতারা আশ্রয় নেন পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে।
হামলাকারীরা সমাবেশস্থল ও আশপাশে অগ্নিসংযোগ করে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে শহরজুড়ে। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ। পরে সেনা ও বিজিবিও যুক্ত হয় অভিযান পরিচালনায়।
বিকেলে হামলা হয় জেলা কারাগারেও। একযোগে অভিযানে নামে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবি। এরপরই জারি হয় কারফিউ।