জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘দিল্লি না ঢাকা’ স্লোগান শুধু প্রতিবাদ ছিল না, তা ছিল একটি আদর্শিক অবস্থান। এই অবস্থান থেকেই এনসিপি রাজনীতিতে পথ খুঁজে নিচ্ছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুর ১টা ২০ মিনিটে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর রায়ডাঙ্গা গ্রামে আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, “আবরার ফাহাদ আমাদের দেখিয়ে গেছেন বাংলাদেশপন্থী রাজনীতির পথ, ভারতীয় আধিপত্য ও আগ্রাসনবিরোধী অবস্থান। সেই পথেই জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজনীতি করে। এই পথ ধরেই জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল।”
তিনি আরও বলেন, “আবরার ফাহাদ থেকে আবু সাইদ—সকল শহীদদের আমরা স্মরণ করি। গত ১৬ বছরে যারা গুম-খুন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদের স্মৃতিই আমাদের অনুপ্রেরণা। ‘জুলাই পদযাত্রা’য় আমরা শহীদদের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছি—সেই বাংলাদেশ গড়তে চাই, যা হবে স্বাধীন, সার্বভৌম ও মর্যাদাশীল।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “আবরার ছিলেন বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী। ছাত্রলীগের হাতে তিনি নির্মম নির্যাতনে প্রাণ হারান। কারণ? তিনি দেশের স্বার্থে কথা বলেছিলেন, ফেসবুকে লিখেছিলেন ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে, ফেনী নদী চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থহানির বিষয়ে। ভারতের তাঁবেদার ফ্যাসিস্ট সংগঠন ছাত্রলীগ সেদিন তাকে হত্যা করেছিল।”
তিনি উল্লেখ করেন, “২০১৯ সালে আবরার হত্যার প্রতিবাদে বুয়েট, ঢাবি ও সারা বাংলাদেশে আমরা আধিপত্যবিরোধী ও সন্ত্রাসবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম। তা ছিল আমাদের ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের এক মাইলফলক।”
নাহিদ বলেন, “২০১৮ সালের কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পর ২০১৯ সালের আবরার হত্যাকাণ্ড জাতীয় রাজনীতিকে নতুন গতি দিয়েছিল। ভারতের আধিপত্যবিরোধী রাজনীতি তখন নতুন করে উত্থান ঘটায়।”
এ সময় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ, মা রোকেয়া খাতুন এবং এনসিপির সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন—যাদের মধ্যে ছিলেন সামান্তা শারমিন, ড. আতিক মুজাহিদ, আখতার হোসেন, ডা. তাসনিম জারা, নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, সাইফুল্লাহ হায়দার, আসাদুল্লাহ আল গালিব, আবু সাঈদ লিয়ন, ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ ও ফিহাদুর রহমান দিবস।
এছাড়া এনসিপির অঙ্গসংগঠন যুব শক্তি ও শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় নেতারা এবং কুষ্টিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।