নতুন দেশ গড়ার প্রত্যয়ে গাইবান্ধা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি শুরু করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় গাইবান্ধা পৌরপার্কে আয়োজিত এক জনসমাবেশে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এই কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “২০২৪ সালে আমরা শেখ হাসিনাকে উৎখাতের লক্ষ্যে রাজপথে নেমেছিলাম। সেই সরকার পতনের পরও কাঙ্ক্ষিত নতুন দেশ এখনও গড়ে ওঠেনি। এবার আমরা সেই নতুন দেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আন্দোলনে নেমেছি। গাইবান্ধা থেকেই এই সংগ্রামের সূচনা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “গাইবান্ধার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে এখানকার ছয়জন শহীদ হয়েছেন, যারা আমাদের নতুন স্বাধীনতার পথ উন্মুক্ত করেছেন। তাদের আত্মত্যাগ জাতি আজীবন স্মরণে রাখবে।”
আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে নাহিদ ইসলাম বলেন, “এই অভ্যুত্থানে হাজারো মানুষ রক্ত দিয়েছেন। তারা চেয়েছিলেন একটি নতুন বাংলাদেশ, যেখানে কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে, মানুষকে আর পুলিশের লাঠি কিংবা গুলির ভয় নিয়ে চলতে হবে না। ২০২৪ সালেই আমাদের ভয় কেটে গেছে। বাংলাদেশে আর কোনো ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে উঠতে দেবো না।”
সমাবেশে তিনি সকল নাগরিককে সাহসিকতার সঙ্গে এলাকার সমস্যাগুলো তুলে ধরার আহ্বান জানান এবং বলেন, “আপনারা নির্ভয়ে মত প্রকাশ করুন, কথা বলুন। এনসিপি আপনাদের পাশে রয়েছে।”
এর আগে সকালে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন এবং সাদুল্লাপুরে সংক্ষিপ্ত পথসভা করেন। পরে তারা গাইবান্ধা শহরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় ও শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি এনসিপির দেশব্যাপী আন্দোলনের অংশ, যার লক্ষ্য জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংস্কার ও একটি নতুন সংবিধানের দাবি উত্থাপন।
কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ—সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, ডা. তাসনিম জারা, সারজিস আলম, সাইফুল্লাহ হায়দার, আসাদুল্লাহ আল গালিব, আবু সাঈদ লিয়ন, হাসনাত আবদুল্লাহ, ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী এবং সদস্য ফিহাদুর রহমান দিবস।
এছাড়াও গাইবান্ধার সাত উপজেলার স্থানীয় নেতাকর্মীরা পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।